কাজী আবদুল আলীম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কাজী আবদুল আলীম
জন্ম(১৯৩৩-১২-৩১)৩১ ডিসেম্বর ১৯৩৩
মৃত্যু২৫ আগস্ট ২০০৭(2007-08-25) (বয়স ৭৩)
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
মাতৃশিক্ষায়তনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ওরেগন বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাক্রীড়াবিদ, লেখক

কাজী আবদুল আলীম (৩১ ডিসেম্বর ১৯৩৩ - ২৫ আগস্ট ২০০৭) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়া সংগঠক। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি ধারাবাহিকভাবে নয় বছর প্রাদেশিক অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেন এবং ১৯৫০ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত সাত বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এ্যাথলেটিএক্সে চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে ক্রীড়ায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক 'স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার' লাভ করেন।

শৈশব ও শিক্ষা জীবন[সম্পাদনা]

কাজী আবদুল আলীম ১৯৩৩ সালে পুরনো ঢাকার রোকনপুরের জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম কাজী আবদুল মতিন ও মাতার নাম মাকসুদা বেগম। পাঁচ ভাই ও ছয় বোন এবং পিতার দ্বিতীয় স্ত্রীর এক পুত্র সন্তান এবং চার কন্যা সন্তান হওয়ায় কাজী আবদুল আলীমের ভাই-বোনের সংখ্যা পনেরো জন।[১] তিনি সেইন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় এবং কে. এল. জুবিলি বিদ্যালয়ে পড়েছেন, তারপর ১৯৪৭ সালে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশ পরীক্ষায় উর্ত্তীর্ণ হন। তিনি জগন্নাথ কলেজ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৯ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের জন্য ভর্তি হন। এখান থেকে তিনি ১৯৫৪ সালে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতক এবং ১৯৫৬ সালে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে, তিনি শারীরিক শিক্ষায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের জন্য অরেগন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, এই জন্য এশিয়া ফাউন্ডেশন তাকে বৃত্তি প্রদান করে।

ক্রীড়া জীবন[সম্পাদনা]

কাজী আবদুল আলীম ১৯৫১ সালে পোলভল্টে পাকিস্তানের জাতীয় রেকর্ড ভাঙ্গেন। তিনি ১৯৫০ সাল থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত প্রাদেশিক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাথলেটিক দলেন অধিনায়ক ছিলেন এবং ১৯৫৫ ও ১৯৫৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পূর্বপাকিস্তান দলের অধিনায়ক ছিলেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আলীম একজন পেশাদার ক্রীড়াবিদ প্রশিক্ষক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ১৯৫৬-১৯৫৯ সালে পাকিস্তান অলিম্পিকের পূর্ব পাকিস্তানের জন্য ক্রীড়া প্রশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন তাকে জাতীয় প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত তিনি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পরবর্তীকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৬২ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত সাবেক পূর্ব পাকিস্তান দলের ব্যবস্থাপক এবং প্রশিক্ষক ছিলেন। তিনি ১৯৬৫ থেকে ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত তিনি জাতীয় ক্রীড়া প্রশিক্ষণ ও প্রশিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি প্রাদেশিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের সংগঠক ছিলেন ও করাচিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পূর্ব পাকিস্তান দলের ব্যবস্থাপক ছিলেন। একই বছর তিনি এডিনবার্গে অনুষ্ঠিত ব্রিটিশ কমনওয়েলথ গেমসে পাকিস্তান এ্যাথলেটিকস দলের সহযোগী ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৪ সালে তাকে সরকারী শারীরিক শিক্ষা কলেজ, ঢাকার অধ্যক্ষ নিযুক্ত করা হয়। তিনি ১৯৮২-১৯৮৯ সময়কালে এই কলেজে আবার কাজ করেছিলেন। ১৯৭৯ সালে, তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্পোর্টসের (পরে যা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হয়) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি হিরোশিমায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমস এবং ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ গেমসে বাংলাদেশ দলের উপ-প্রধান দলনেতার দায়িত্ব পালন করেন।

আলীম ৪৩টি বই লিখেছেন যার মধ্যে ১৮টি শারীরিক শিক্ষার উপর লিখেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯৬১ সালে তিনি কাজী সেলিমাকে বিয়ে করেন। তাদের তিন পুত্র রয়েছে।

পুরস্কার[সম্পাদনা]

  • ইউনেস্কো এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শারীরিক শিক্ষা এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতা (২০০৪)
  • দেশবন্ধু সিআর দাস স্বর্ণ পদক (২০০২)
  • স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৩)
  • 'বেগম জেবুন্নেসা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ' স্বর্ণ পদক (১৯৯২)
  • জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার (১৯৭৭)

মৃত্যু[সম্পাদনা]

তিনি ২৫ আগস্ট ২০০৭ সালে ঢাকায় ট্রমা সেন্টারে অপারেশন থিয়েটারে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "কাজী আবদুল আলীম"www.gunijan.org.bd। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]