করুণাময়ী কালী মন্দির, আমডাঙা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

করুণাময়ী কালী মন্দির পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার আমডাঙা ব্লকের একটি সুপ্রাচীন কালী মন্দির[১]

প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও কিংবদন্তি[সম্পাদনা]

মুঘল সম্রাট আকবরের রাজপুত সেনাপতি মানসিংহ আমডাঙার সূক্ষ্মাবতী নদীর তীরে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই মন্দিরের প্রথম পুরোহিত ছিলেন রামানন্দ গিরি গোস্বামী। রামানন্দ প্রথমে যশোহরের বিখ্যাত যশোহরেশ্বরী কালী মন্দিরের সেবায়েত ছিলেন। রাজা প্রতাপাদিত্যের সঙ্গে মুঘল বাহিনীর যুদ্ধ বাধলে রামানন্দ গোপনে মানসিংহকে সাহায্য করেন। মানসিংহ জয়লাভ করে যশোহরেশ্বরী কালীর মূর্তিটি তার নিজের শহর রাজস্থানের অম্বর দুর্গে নিয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এদিকে প্রতাপাদিত্যের তিরস্কারে রামানন্দ প্রায় উন্মাদ হয়ে যান। কথিত আছে, এই সময় মানসিংহ কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে সূক্ষ্মাবতী নদীর তীরে ঘন জঙ্গলে যশোহরেশ্বরী কালীর বিকল্প করুণাময়ী কালীমূর্তিটি প্রতিষ্ঠা করেন। রামানন্দের নামানুসারে এই অঞ্চলের নাম হয় ‘রামডাঙা’। পরে রামডাঙা কথাটি লোকমুখে বিকৃত হয়ে হয় ‘আমডাঙা’। কথিত আছে, ১৭৬৪ সালে মীরজাফরের জামাই মীরকাশিম নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলে কৃষ্ণচন্দ্র দেবীর কৃপায় অলৌকিক উপায়ে রক্ষা পেয়েছিলেন। এরপর তিনি করুণাময়ী কালী মন্দিরকে ৩৬৫ বিঘা নিষ্কর জমি প্রদান করেন।[১]

বিগ্রহ[সম্পাদনা]

করুণাময়ী কালীমূর্তিটি মন্দিরের দোতলায় প্রতিষ্ঠিত। আনুমানিক দুই ফুট উচ্চতার মূর্তিটি কষ্টিপাথরে নির্মিত। দেবীমূর্তি সালঙ্করা, ত্রিনয়না, মুণ্ডমালিনী ও মহাদেবের বক্ষের ওপর দন্ডায়মান।[২]:৯০ সামনে চন্দনকাঠের সূক্ষ কারুকাজ-শোভিত দরজাটি ৪৫০ বছরের পুরনো। মন্দিরের একতলায় রত্নবেদীটি ১০৮টি শালগ্রাম শিলার উপর প্রতিষ্ঠিত।[১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. উদ্বোধন পত্রিকায় প্রকাশিত স্বামী দিব্যজ্ঞানানন্দের প্রবন্ধ "বাংলার কালী", মাঘ ১৪১৮ সংখ্যা (১১৪তম বর্ষ, প্রথম সংখ্যা), পৃষ্ঠা ৩২
  2. তিন তীর্থে, শিবশঙ্কর ভারতী, সাহিত্যম্‌, ১৮বি, শ্যামাচরণ দে স্ট্রিট, কলকাতা-৭৩, প্রথম প্রকাশ- ১৮ই জানুয়ারী, ২০০১