উত্তরাখণ্ড

স্থানাঙ্ক: ৩০°২০′ উত্তর ৭৮°০৪′ পূর্ব / ৩০.৩৩° উত্তর ৭৮.০৬° পূর্ব / 30.33; 78.06
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
(উত্তরাঞ্চল থেকে পুনর্নির্দেশিত)
উত্তরাখণ্ড
उत्तराखण्ड
उत्तराखण्डराज्यम्
রাজ্য
উত্তরাখণ্ডের অফিসিয়াল লোগো
উত্তরাখণ্ডের সিলমোহর
ডাকনাম: দেবভূমি
देवभूमि
ভারতের মানচিত্রে উত্তরাখণ্ডের অবস্থান (লাল রঙে চিহ্নিত)
ভারতের মানচিত্রে উত্তরাখণ্ডের অবস্থান (লাল রঙে চিহ্নিত)
উত্তরাখণ্ডের মানচিত্র
উত্তরাখণ্ডের মানচিত্র
স্থানাঙ্ক (দেরাদুন): ৩০°২০′ উত্তর ৭৮°০৪′ পূর্ব / ৩০.৩৩° উত্তর ৭৮.০৬° পূর্ব / 30.33; 78.06
দেশ ভারত
অঞ্চলউত্তর ভারত
প্রতিষ্ঠা৯ নভেম্বর, ২০০০ [a]
ইতিহাস
সারসংক্ষেপ
রাজধানীদেরাদুন [b]
বৃহত্তম শহরদেরাদুন
জেলা১৩টি
সরকার
 • শাসকভারত সরকার
 • রাজ্যপালবেবি রানি মৌর্য
 • মুখ্যমন্ত্রীত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াত
 • উত্তরাখণ্ড বিধানসভাএককক্ষীয় (৭১টি আসনবিশিষ্ট) [c]
 • সংসদীয় ক্ষেত্ররাজ্যসভা (৩টি আসন)
লোকসভা (৫টি আসন)
 • হাইকোর্টউত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট
আয়তন
 • মোট৫৩,৪৮৩ বর্গকিমি (২০,৬৫০ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম১৯শ
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট১,০১,১৬,৭৫২
৫১,৫৪,১৭৮
৪৯,৬২,৫৭৪
 • ক্রম২০শ
 • জনঘনত্ব১৮৯/বর্গকিমি (৪৯০/বর্গমাইল)
 • ঘনত্বের ক্রম২০শ
বিশেষণউত্তরাখণ্ডি
সময় অঞ্চলভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০)
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-UT
যানবাহন নিবন্ধনUK 01—XX
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১১)বৃদ্ধি ০.৫১৫[১](মধ্যম)
মানব উন্নয়ন সূচক অনুসারে স্থান৭ম
লিঙ্গ অনুপাত৮৪১/১,০০০♂
সাক্ষরতা (২০১১)৭৯.৬৩%
৮৮.৩৩%
৭০.৭০%
কথিত ভাষাহিন্দি
গাড়োয়ালি
কুমায়োনি
উর্দু
পাঞ্জাবি
জৌনসারি
ভোটি
রাজি
রাথি/সালানি
নেপালি
সরকারি ভাষাহিন্দি
সংস্কৃত
ওয়েবসাইটwww.uk.gov.in
^a উত্তরপ্রদেশ পুনর্গঠন আইন, ২০০০ অনুসারে উত্তরপ্রদেশ ভেঙে ২০০০ সালের ৯ নভেম্বর সৃষ্ট
^b দেরাদুন রাজ্যের অন্তর্বর্তী রাজধানী। নতুন রাজধানী এখনও নির্বাচিত হয়নি।
^c ৭০টি আসন নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং ১টি আসন আংলো ইন্ডিয়ান গোষ্ঠীর থেকে মনোনীত সদস্যের জন্য রক্ষিত।

উত্তরাখণ্ড (হিন্দি: उत्तराखण्ड, পূর্বতন নাম উত্তরাঞ্চল) [২] উত্তর ভারতের একটি স্থলবেষ্টিত রাজ্য। এই রাজ্যে অনেক হিন্দু মন্দির ও তীর্থস্থান আছে বলে, এটিকে ‘দেবভূমি’ বা ‘দেবতাদের দেশ’ বলা হয়। হিমালয়, ভাবরতরাই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এই রাজ্য বিখ্যাত। ২০০০ সালের ৯ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের হিমালয় ও তৎসংলগ্ন জেলাগুলি নিয়ে ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ২৭তম রাজ্য হিসেবে উত্তরাখণ্ড রাজ্য সৃষ্টি করা হয়েছিল।[৩] উত্তরাখণ্ডের উত্তর দিকে চীনের তিব্বত, পূর্বদিকে নেপালের মহাকালী অঞ্চলসুদূর-পশ্চিমাঞ্চল, দক্ষিণ দিকে ভারতের উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্য অবস্থিত। উত্তরাখণ্ড রাজ্যটি দুটি বিভাগে বিভক্ত। এগুলি হল: গাড়োয়ালকুমায়ূন বিভাগ। এই দুই বিভাগের অন্তর্গত মোট জেলার সংখ্যা ১৩। উত্তরাখণ্ডের অন্তর্বর্তী রাজধানী হল দেরাদুন। দেরাদুনই এই রাজ্যের বৃহত্তম শহর ও রেল টার্মিনাস। উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট নৈনিতাল শহরে অবস্থিত।

পুরাতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে উত্তরাখণ্ড ভূখণ্ডে প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে মানুষের বসতি থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতে বৈদিক যুগে এই অঞ্চল কুরুপাঞ্চাল মহাজনপদের অংশ ছিল। গাড়োয়াল ও কুমায়ূন অঞ্চলের প্রথম উল্লেখযোগ্য রাজবংশটি ছিল কুনিন্দ রাজবংশ। খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর এই রাজবংশ আদি শৈব ধর্মাবলম্বী ছিল। কলসিতে প্রাপ্ত অশোকের শিলালিপি থেকে জানা যায়, এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মের অস্তিত্ব ছিল। মধ্যযুগে এই অঞ্চল কুমায়ূন রাজ্যগাড়োয়াল রাজ্যের অন্তর্গত হয়। ১৮০৩ সালে এই রাজ্য নেপালের গোর্খা সাম্রাজ্যের অন্তর্গত হয়। ১৮১৬ সালে ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধের পর অধুনা উত্তরাখণ্ডের অধিকাংশ অঞ্চল সুগৌলী সন্ধিচুক্তি বলে ব্রিটিশ ভারতের অঙ্গীভূত হয়। পূর্বতন গাড়োয়াল ও কুমায়ূন ও গাড়োয়াল রাজ্যদুটি পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি রাজ্য হলেও, বিভিন্ন প্রতিবেশী জাতিগোষ্ঠীর অবস্থান এবং পারস্পরিক ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও প্রথাগত মিলের জন্য দুই অঞ্চলের মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছিল তা ১৯৯০-এর দশকে উত্তরাখণ্ড আন্দোলনকে বিশেষ গতি দিয়েছিল।

উত্তরাখণ্ডের অধিবাসীদের উত্তরাখণ্ডি বলা হয়। বিশেষভাবে অঞ্চল অনুসারে, উত্তরাখণ্ডের অধিবাসীদের গাড়োয়ালিকুমায়ুনি – এই দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ১০,১১৬,৭৫২। জনসংখ্যার দিক থেকে এটি ভারতের ১৯শ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য। এই রাজ্যের জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশ রাজপুতব্রাহ্মণ। রাজ্যের ৮৫% লোক হিন্দু ধর্মাবলম্বী। মুসলমানেরা এই রাজ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী। এছাড়াও শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধজৈনরাও এই রাজ্যে বাস করেন। গাড়োয়ালিকুমায়ূনী ভাষা এবং অন্যান্য পার্বত্য উপভাষাগুলি রাজ্যের প্রধান আঞ্চলিক ভাষা। হিন্দি এই রাজ্যের সর্বাধিক কথিত ভাষা। উত্তরাখণ্ডই ভারতের একমাত্র রাজ্য যেখানী সংস্কৃত একটি সরকারি ভাষার মর্যাদা পায়।

নামকরণ[সম্পাদনা]

সংস্কৃত ভাষায় ‘উত্তরাখণ্ড’ নামটির অর্থ ‘উত্তরের দেশ’। প্রাচীন হিন্দুশাস্ত্রে ‘কেদারখণ্ড’ (অধুনা গাড়োয়াল বিভাগ, উত্তরাখণ্ড) ও ‘মানসখণ্ড’ (অধুনা কুমায়ুন বিভাগ, উত্তরাখণ্ড) – উভয় অঞ্চলকে ‘উত্তরাখণ্ড’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাচীন পুরাণগুলিতে ‘উত্তরাখণ্ড’ বলতে ভারতের হিমালয় পর্বতমালার মধ্যবর্তী অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে।[৪]

১৯৯৮ সালে ভারত সরকারউত্তরপ্রদেশ সরকার যখন উত্তরপ্রদেশ রাজ্যটিকে ভেঙে নতুন রাজ্য গঠনের উদ্যোগ নিয়েছিল, তখন অবশ্য ভারতীয় জনতা পার্টি কর্তৃক নতুন রাজ্যের নাম স্থির করা হয় ‘উত্তরাঞ্চল’। উত্তরাঞ্চল নাম গ্রহণের কারণ ছিল, এই নামটির মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী মানসিকতা কম প্রকাশ পায়। তবে নতুন রাজ্যের দাবিদার আন্দোলনকারীরা এই নাম গ্রহণের তীব্র সমালোচনা করেন। তাঁরা এই নামকরণটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করেছিলেন।[৫] নতুন রাজ্য গঠনের পর সরকারিভাবে ‘উত্তরাঞ্চল’ নামটি ব্যবহৃত হতে থাকলেও, জনসাধারণের মধ্যে ‘উত্তরাখণ্ড’ নামটিই বেশি জনপ্রিয় ছিল।

২০০৬ সালের অগস্ট মাসে উত্তরাঞ্চল বিধানসভাউত্তরাখণ্ড রাজ্য আন্দোলনের প্রধান ব্যক্তিত্বদের দাবি মেনে নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট রাজ্যের নাম পরিবর্তনে সম্মত হয়। ২০০৬ সালের অক্টোবরে এই মর্মে উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় একটি আইন পাস হয়।[৬] সেই বছরই ভারতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট একটি বিল উত্থাপন করে। ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ. পি. জে. আব্দুল কালাম সংসদে পাস হওয়া বিলটিতে সাক্ষর করেন। ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘উত্তরাখণ্ড’ রাখা হয়।[৭]

ইতিহাস[সম্পাদনা]

প্রাগৈতিহাসিক যুগ[সম্পাদনা]

প্রাগৈতিহাসিক যুগের শিলাচিত্র, পাথরের ছাউনি, প্রত্নতাত্ত্বিক পাথরের যন্ত্রপাতি (কয়েক হাজার বছরের পুরনো) এবং বৃহৎ প্রস্তরখণ্ড থেকে প্রমাণিত হয় উত্তরাখণ্ডের পার্বত্য অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক যুগেও জনবসতির অস্তিত্ব ছিল। এছাড়া এখানে প্রাপ্ত পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন থেকে জানা যায় যে আদি বৈদিক যুগেও (খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ) এখানে বৈদিক ধর্মাবলম্বীরা বাস করত।[৮]

প্রাচীন যুগ[সম্পাদনা]

Historical temples at Jageshwar
জগেশ্বরের একটি ঐতিহাসিক মন্দির। বর্তমানে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া কর্তৃক সংরক্ষিত।

পৌরব, কুষাণ, কুণ্ডিন, গুপ্ত, গুর্জর-প্রতিহার, কাত্যুরি, রাইকা, পাল, চন্দ, পানোয়ারের পারমার, শিখব্রিটিশরা পর্যায়ক্রমে উত্তরাখণ্ড অঞ্চল শাসন করে।[৪]

অস্ট্রো-এশীয় উপজাতি কোলরা এই অঞ্চলের প্রকৃত বাসিন্দা। বৈদিক যুগে (খ্রিস্টপূর্ব ১৭০০-১১০০ অব্দ) উত্তরপশ্চিমাঞ্চল থেকে ইন্দো-আর্য খাসাস উপজাতি এই অঞ্চলে এসে কোলেদের সঙ্গে বসবাস শুরু করে। সেই সময় অধুনা উত্তরাখণ্ড ভূখণ্ড ঋষিসাধুদের আবাসস্থল ছিল। হিন্দুরা বিশ্বাস করে, ব্যাস উত্তরাখণ্ডেই মহাভারত নামক মহাকাব্যটি রচনা করেছিলেন।[৯] গাড়োয়াল ও কুমায়ুএর প্রথম প্রধান রাজবংশগুলির মধ্যে অন্যতম হল কুণ্ডিন রাজবংশ। খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীর এই রাজবংশ ছিল শৈব ধর্মাবলম্বী। এরা পশ্চিম তিব্বতে নুন রফতানি করত। পশ্চিম গাড়োয়ালের কালসিতে অশোকের শিলালিপি থেকে প্রমাণিত হয় এই অঞ্চলে বৌদ্ধধর্মও প্রসার লাভ করেছিল। মূলধারার হিন্দুধর্মের সঙ্গে লৌকিক শমনীয় ধর্মবিশ্বাসও এই অঞ্চলে প্রচলিত ছিল। যদিও আদি শঙ্কর ও সমতলের অন্যান্য বাসিন্দাদের এই অঞ্চলের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে গাড়োয়াল ও কুমায়ুনে ব্রাহ্মণ্যধর্ম পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়। খ্রিস্টীয় ৪র্থ থেকে ১৪শ শতাব্দীর মধ্যে কুমায়ুনের কাত্যুর (অধুনা বৈজনাথ) উপত্যকা-সংলগ্ন অঞ্চল শাসন করেছিল কাত্যুরি রাজবংশ। জগেশ্বরের ঐতিহাসিক মন্দিরটি সম্ভবত কাত্যুরিরাই প্রতিষ্ঠা করেন। পরে এটি সংস্কার করেছিলেন চন্দ রাজারা। কিরাত নামে পরিচিত তিব্বতি-বর্মীয় গোষ্ঠী সম্ভবত উত্তরাখণ্ডের উত্তরের উচ্চভূমি ও সমগ্র অঞ্চলের নানা স্থানে বসবাস শুরু করেছিল। এরা সম্ভবত আধুনিক কালের ভোটিয়া, রাজি, বুকসাথারুদের পূর্বপুরুষ।[১০]

মধ্যযুগ ও ব্রিটিশ শাসন[সম্পাদনা]

Princely flag of Garhwal Kingdom
গাড়োয়াল রাজ্যের রাজপতাকা

মধ্যযুগে উত্তরাখণ্ডের পশ্চিমাঞ্চল ছিল গাড়োয়াল রাজ্য এবং পূর্বাঞ্চল ছিল কুমায়ুন রাজ্যের অধীনে। এই যুগে পাহাড়ি চিত্রকলা নামে এক চিত্রকলার এক নতুন শৈলী এখানে বিকাশ লাভ করেছিল।[১১] আধুনিক গাড়োয়াল অঞ্চল পারমার রাজাদের অধীনে একত্রীভূত হয়েছিল। বহু ব্রাহ্মণরাজপুতদের সঙ্গে এই পারমাররা এই অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন।[১২] ১৭৯১ খ্রিস্টাব্দে নেপালের গোর্খা সাম্রাজ্য কুমায়ুন রাজ্যের রাজধানী আলমোড়া দখল করে নেয়। ১৮০৩ খ্রিস্টাব্দে গোর্খারা গাড়োয়াল রাজ্যও দখল করে নেয়। ১৮১৬ খ্রিস্টাব্দে ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধের পর তেহরির একটি ক্ষুদ্র অঞ্চল হিসেবে গাড়োয়াল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। তেহরির বৃহত্তর অংশ, পূর্ব গাড়োয়াল ও কুমায়ুন সুগৌলির চুক্তি অনুসারে ব্রিটিশদের অধীনে আসে।

Map of Uttarakhand as part of United Province
যুক্তপ্রদেশের অঙ্গ হিসেবে উত্তরাখণ্ড, ১৯০৩

স্বাধীনোত্তর যুগ ও উত্তরাখণ্ড আন্দোলন[সম্পাদনা]

ভারতের স্বাধীনতার পর গাড়োয়াল রাজ্য উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের অন্তর্গত হয়। এই সময় অধুনা উত্তরাখণ্ড ভূখণ্ড উক্ত রাজ্যের গাড়োয়াল ও কুমায়ুন বিভাগের মধ্যে বিভক্ত ছিল।[১৩] ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলের নাম হিসেবে ‘উত্তরাখণ্ড’ শব্দটিই সর্বাধিক পরিচিত ছিল। উত্তরাখণ্ড ক্রান্তি দল সহ একাধিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই সময় থেকে এই নামে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। গাড়োয়াল ও কুমায়ুন রাজ্যদুটি পূর্বে পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজ্য হলেও, ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ভাষাগত ও প্রথাগত দিক থেকে এই দুই অঞ্চল ছিল অবিচ্ছেদ্য ও পরস্পরের পরিপূরক।[১৪] এই সম্পর্কের ভিত্তিতেই উত্তরাখণ্ডের নতুন রাজনৈতিক পরিচিতির দাবি জোরালো হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে এই আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। এই সময়ই উত্তরাখণ্ড রাজ্য গঠনের দাবি স্থানীয় জনসাধারণ ও জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলি সর্বসম্মতভাবে মেনে নেয়।[১৫] এই সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ছিল ১৯৯৪ সালের ১ অক্টোবর রাত্রিতে রামপুর তিরাহা গুলিচালনার ঘটনা। এই ঘটনা জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ আলোড়ন তোলে।[১৬] ১৯৯৮ সালের ২৪ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় উত্তরপ্রদেশ পুনর্গঠন বিল পাস হলে নতুন রাজ্য গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।[১৭] দুবছর পর ভারতীয় সংসদে উত্তরপ্রদেশ পুনর্গঠন আইন, ২০০০ পাস হয়। এরপর ২০০০ সালের ৯ নভেম্বর ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের ২৭তম রাজ্য হিসেবে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের জন্ম হয়।

চিপকো আন্দোলন[সম্পাদনা]