ইয়ন মর্গ্যান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইয়ন মর্গ্যান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামইয়ন জোসেফ জেরার্ড মর্গ্যান
জন্ম (1986-09-10) ১০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ (বয়স ৩৭)
ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড
ডাকনামমগি[১]
উচ্চতা৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকামাঝারিসারির ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৬৪৯)
২৭ মে ২০১০ 
ইংল্যান্ড বনাম বাংলাদেশ
শেষ টেস্ট৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ 
ইংল্যান্ড বনাম পাকিস্তান
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ২০৮)
৫ আগস্ট ২০০৬ 
আয়ারল্যান্ড বনাম স্কটল্যান্ড
শেষ ওডিআই১১ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই শার্ট নং১৬
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৩-২০০৮আয়ারল্যান্ড (জার্সি নং ৫০)
২০০৬-বর্তমানমিডলসেক্স (জার্সি নং ৭)
২০১০আরসি ব্যাঙ্গালোর
২০১১-বর্তমানকলকাতা নাইট রাইডার্স
২০১৩-সিডনি থান্ডার (জার্সি নং ১৬)
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১৬ ১০৭ ৭৮ ২০৫
রানের সংখ্যা ৭০০ ৩,১৬৫ ৩,৮৫৯ ৬,০১৩
ব্যাটিং গড় ৩০.৪৩ ৩৯.৫৬ ৩৪.৪৫ ৩৮.০৫
১০০/৫০ ২/৩ ৫/১৯ ৯/১৮ ১০/৩৫
সর্বোচ্চ রান ১৩০ ১২৪* ২০৯* ১৬১
বল করেছে ৯৭ ৪২
উইকেট
বোলিং গড় ৪১.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং ২/২৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১১/– ৪৫/– ৬৩/১ ৭৮/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ৩ ডিসেম্বর ২০১৩

ইয়ন জোসেফ জেরার্ড মর্গ্যান (ইংরেজি: Eoin Morgan; জন্ম: ১০ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৬) আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়। বামহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের পক্ষ হয়ে খেলে থাকেন। টেস্ট, একদিনের আন্তর্জাতিক এবং টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইংল্যান্ড দলের সদস্য ইয়ন মর্গ্যান। বর্তমানে তিনি ইংল্যান্ডের একদিনের আন্তর্জাতিক দলে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি আয়ারল্যান্ডের পক্ষ হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেছিলেন। পরবর্তীতে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলছেন। ক্রিকেটের ইতিহাসে একমাত্র ব্যাটসম্যানরূপে দুই দেশের হয়ে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি দলের ইনিংস সমাপণকারীর ভূমিকায়ও আবির্ভূত হয়ে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছেন। রিভার্স সুইপ শটে দক্ষ ক্রিকেটার হিসেবেও চিহ্নিত তিনি; যা আয়ারল্যান্ডের জনপ্রিয় ক্রীড়া হার্লিং থেকে প্রভাবিত হয়েছেন।

প্রারম্ভিক জীবন[সম্পাদনা]

মর্গ্যান ডাবলিনে জন্মগ্রহণ করেন। লিসন স্ট্রিটের ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটি স্কুলে অধ্যয়ন করেন। বিদ্যালয়ের পক্ষ হয়ে সেখানে তিনবার সিনিয়র কাপ জয় করেন। শৈশবে সপ্তাহে দুইবার হার্লিং খেলায় অংশগ্রহণ করতেন যা তাকে দক্ষ ব্যাটসম্যানরূপে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। হার্লিং খেলাকে অনুসরণ করে রিভার্স সুইপে দক্ষ হয়ে উঠেন।[২]

এ সময়ে সংক্ষিপ্তকালের জন্য ডালউইচ কলেজে ক্রিকেট খেলা বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। এভাবেই তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষ হয়ে খেলার জন্য উদ্বুদ্ধ হন।[২] মর্গ্যান আয়ারল্যান্ড যুব দলের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৭ দলে খেলেন। আয়ার‌ল্যান্ড অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের সদস্য নির্বাচিত হয়ে ২০০৪ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ও সব মিলিয়ে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের অধিকারী হন।[৩] দুই বছর পর তিনি আয়ারল্যান্ড দলের হয়ে ২০০৬ সালের আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় দলকে নেতৃত্ব দেন। সেখানে তিনি সামগ্রীকভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন।[৪]

খেলোয়াড়ী জীবন[সম্পাদনা]

মর্গ্যান সানডে টাইমস পত্রিকাকে জানান যে, ‘তেরো বছর বয়স থেকেই আমি ইংল্যান্ডের পক্ষে ক্রিকেট খেলতে চেয়েছি। সেজন্যে তা বলতে আমি কোনরূপ লজ্জ্বাবোধ করিনি যা আমি করতে চেয়েছি। ক্রিকেটের সাথে সংশ্লিষ্ট নিজ দেশের ব্যক্তিরাও এতে একমত পোষণ করেছিলেন, “সুন্দর খেলা প্রদর্শনে যদি তুমি তা করতে পারো তাহলে তা হবে অবিশ্বাস্য”। তাই আমার এ বিষয়ে কোন লজ্জ্বাবোধ হয়নি এবং আমার বাবাও এ বিষয়ে কোন লজ্জ্বা অনুভব করেননি’।[৫] আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ১০টি পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত দেশ হিসেবে ইংল্যান্ড অন্যতম, যেখানে আয়ারল্যান্ড দল তৎকালীন সময়ই সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিল। একমাত্র পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত দেশগুলোই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ম্যাচসহ সকল স্তরের ক্রিকেটেই অংশগ্রহণ করতে পারে।

মর্গ্যান ইংল্যান্ডের টুয়েন্টি২০ দলের অন্যতম সদস্যরূপে ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত ২০১০ আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। গ্রুপ-পর্বের খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং নিজ মাতৃভূমি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দলের সর্বোচ্চ রান করেন।[৬][৭] এছাড়াও, সুপার এইট পর্বে নিউজিল্যান্ডের পক্ষেও তিনি একই ভূমিকা নেন।[৮] দলের কার্যকরী বোলিংকেভিন পিটারসন এবং ক্রেইগ কাইজওয়েটারের অর্ধ-শতকে সেমি-ফাইনাল ও ফাইনালে যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের প্রান্তে নিয়ে যান।[৯][১০]

আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইংল্যান্ডের পক্ষে ফ্রেডরিক ফেনের সেঞ্চুরি করার শতাধিক বছর পর জুলাই, ২০১০ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ইয়ন মর্গ্যান তার এ রেকর্ডের সাথে যুক্ত হন।

অধিনায়কত্ব[সম্পাদনা]

আয়ারল্যান্ড দলের বিপক্ষে টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অধিনায়কত্ব করেন। স্টুয়ার্ট ব্রডের অনুপস্থিতিতে ২০১২-১৩ মৌসুমে ভারত দলের বিপক্ষেও তিনি অধিনায়করূপে নির্বাচিত হন।[১১]

৬ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে শ্রীলঙ্কা সফরে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চতুর্থ একদিনের আন্তর্জাতিকে ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব করেন। কিন্তু দলের ধীরগতিতে বোলিংয়ের কারণে তার ম্যাচ ফি’র ২০% অর্থ জরিমানা করা হয়।[১২] ৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে ঐ একই কারণে দলের মূল অধিনায়ক অ্যালাস্টেয়ার কুককে পরবর্তী এক খেলায় নিষিদ্ধতার কারণে তিনি ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক মনোনীত হন।[১৩]

২০১৫ সালে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে আয়ারল্যান্ড সফরে তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন না।[১৪] ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) কর্তৃপক্ষ ২৮ এপ্রিল জেমস টেলরকে প্রথমবারের মতো একদিনের আন্তর্জাতিকে অধিনায়ক হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত করে।[১৫]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Eoin Morgan player profile"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১১ 
  2. "Switching colours, switching hits"। Cricinfo। ২১ মে ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০ সেপ্টেম্বর ২০১০ 
  3. ICC U/19 Cricket World Cup, 2003/04 Averages: Ireland Under-19s, Cricinfo, সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০০৭ 
  4. "ICC Under-19s Cricket World Cup, 2005/06 Batting - Most Runs"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১ মার্চ ২০০৭ 
  5. "http://www.spiked-online.com/index.php/site/article/9887/"। ৩ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০১৮  |title= এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)
  6. "England fall victim to rain rules"। CricInfo। ৩ মে ২০১০। 
  7. "Rain saves England in tense washout"। CricInfo। ৪ মে ২০১০। 
  8. "New Zealand eliminated by impressive England"। CricInfo। ১০ মে ২০১০। 
  9. "England stroll to resounding win"। CricInfo। ১৩ মে ২০১০। 
  10. "Kieswetter and Pietersen seal title for England"। CricInfo। ১৬ মে ২০১০। 
  11. "Broad out, Morgan to captain in T20 series"। Cricinfo। ১৩ ডিসে ২০১২। ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১৯ 
  12. "Sri Lanka v England: Eoin Morgan fined for England's slow over rate"BBC Sport। British Broadcasting Corporation। ৯ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  13. "Alastair Cook: England captain given slow over rate ban"BBC Sport। British Broadcasting Corporation। ৪ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৪ 
  14. "Cricket World Cup 2015: Eoin Morgan mystified by loss of form"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  15. "James Taylor to captain England in Ireland ODI"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
স্টুয়ার্ট ব্রড
ইংল্যান্ড টি২০আই অধিনায়ক
২০১২
উত্তরসূরী
জেমস ট্রেডওয়েল