ইউসুফ আলী চৌধুরী

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ইউসুফ আলী চৌধুরী
১৯৫৩ সালে ইউসুফ আলী চৌধুরী
জন্ম১৯০৫
মৃত্যু২৬ নভেম্বর ১৯৭১(1971-11-26) (বয়স ৬৫–৬৬)
করাচি, পাকিস্তান
অন্যান্য নামমোহন মিয়া
প্রতিষ্ঠানমুসলিম লীগ, প্রজা পার্টি, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি
আন্দোলন
সন্তান
পিতা-মাতা
আত্মীয়চৌধুরী আবদুল্লাহ জহিরউদ্দিন (ভাই)

ইউসুফ আলী চৌধুরী (মোহন মিয়া) (২৯ ডিসেম্বর ১৯০৫ - ২৬ নভেম্বর ১৯৭১)[১] ভারতীয় উপমহাদেশের একজন প্রভাবশালী বাঙ্গালি রাজনীতিবিদ, যিনি ভারত-বিভাগ ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় এবং মুসলমান সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর পিতা চৌধুরী ময়েজউদ্দীন বিশ্বাস ছিলেন জমিদার। নিজে জমিদার পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি ব্রিটিশ আমলে নির্যাতিত প্রজাদের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। ব্রিটিশ শাসন বিরোধী আন্দোলনে তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

তাঁর জন্ম: ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে ডিসেম্বর, মৃত্যু: ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে নভেম্বর। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। [২][৩] মোহন মিয়া নামে তিনি সমধিক পরিচিত ছিলেন। তার পুত্রদ্বয় চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ ও চৌধুরী আকমল ইবনে ইউসুফ পরবর্তীকালে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী (১৯৯১-৯৬) এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী (২০০১-০৬) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা]

মোহন মিয়া ফরিদপুরের ঈশান স্কুলে দশম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষালাভ করেন। কৈশোরে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমেই রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ ঘটে। পাকিস্তান আন্দোলন এবং মুসলিম লীগ পুনর্গঠনে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৩৭ সালে তিনি বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন ফরিদপুর জেলা মুসলিম লীগের সভাপতি (১৯৪১-১৯৫৩), বঙ্গীয় মুসলিম লীগ ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য (১৯৪১-১৯৪৭), পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক (১৯৪৭-১৯৫২)। ১৯৫৩ সালে তিনি দল থেকে বহিষৃকত হয়ে কৃষক-শ্রমিক পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫০ সালে গণপরিষদ এবং ১৯৫৫ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে তিনি প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং এ.কে ফজলুল হক মন্ত্রিসভার  কৃষি, বন ও পাট মন্ত্রী নিযুক্ত হন। ইউসুফ আলী চৌধুরী ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্য প্রতিষ্ঠা, এ.কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টির গোড়াপত্তন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট গঠন এবং পরবর্তী সময়ে পিডিএম ও পিডিপি প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা রাখেন। শেরেবাংলা এ.কে ফজলুল হক তাকে "এভিল জিনিয়াস" আখ্যায়িত করেন।

সবশেষে তিনি নুরুল আমিনের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (পিডিপি) যোগ দেন। আইয়ুব শাসনামলে তিনি স্বৈরশাসন বিরোধী ডেমোক্রেটিক অ্যাকশন কমিটি (ডাক) গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৭০ সালে তিনি পিডিএম-এর সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন।

দলীয় প্রধান নুরুল আমিনের আহবানে ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর তিনি করাচি যান এবং ২৬ নভেম্বর সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন।

স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকাঃ[সম্পাদনা]

মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই তিনি পাকিস্তান সরকারের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটিতে যোগ দেন। পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তিনি খুব আস্থাভাজন ছিলেন।

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "মোহন মিয়ার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে, ইত্তেফাক, ২৬ নভেম্বর ২০১৭"। ২০ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২১ 
  2. মোহন মিয়া : একজন স্বাপ্নিক রাজনীতিবিদ
  3. "স্মরণ : ইউসুফ আলী চৌধুরী"। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১২ 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]