আবদুল মালেক বীর প্রতীক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আবদুল মালেক
জন্ম(১৯৪০-১১-২২)২২ নভেম্বর ১৯৪০
মৃত্যু৩ সেপ্টেম্বর ২০১১(2011-09-03) (বয়স ৭০)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
দাম্পত্য সঙ্গীআম্বিয়া বেগম
পুরস্কারবীর প্রতীক
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবদুল মালেক (দ্ব্যর্থতা নিরসন)

আবদুল মালেক (জন্ম: ২২নভেম্বর ১৯৪০- মৃত্যু: ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১১[১]) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [২]

জন্ম ও শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]

আবদুল মালেকের জন্ম রাজশাহী জেলার রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (ডাক ঘোড়ামারা) রানীনগরে। বাবার নাম আবেদ আলী এবং মায়ের নাম ফেলি বেগম। তার স্ত্রীর নাম আম্বিয়া বেগম। তাদের তিন ছেলে।মোঃ আমজাদ হোসেন,মোঃ এমদাদ হোসেন ও মোঃ এনামুল হোসেন।

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

আবদুল মালেক চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে পুনর্গঠিত হয়ে প্রথমে ৩ নম্বর সেক্টরে, পরে এস ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন।[৩]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা[সম্পাদনা]

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান নিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-সিলেট মহাসড়েকের পাশে পাইকপাড়ায়। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। সব মিলে এক ব্যাটালিয়ন শক্তির। নেতৃত্বে এ এস এম নাসিম (বীর বিক্রম)। তার নির্দেশে কিছুক্ষণ পর মুক্তিযোদ্ধাদের একাংশ (ব্রাভো [বি] কোম্পানি) গেল চান্দুরার এক মাইল উত্তর-পূর্ব দিকে। তাদের দায়িত্ব অগ্রসরমান মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বি দল নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান নিয়েছে। এ খবর পাওয়ার পর বাকি মুক্তিযোদ্ধারা হরষপুর-সরাইল হয়ে রওনা হলেন চান্দুরার অভিমুখে। তিনটি দল—আলফা (এ), চার্লি (সি) ও ডেল্টা (ডি) কোম্পানি। তারা দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকল। ডি দলে আছেন আবদুল মালেক। তাদের বাঁ দিকে এ ও সি দল। বেলা আনুমানিক দুইটা। ডি দল সরাইলের পথে শাহবাজপুরের কাছে পৌঁছে গেল। যুদ্ধের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডি দল অগ্রসর হচ্ছে অন্য দুই দলের পেছনে। একদম সামনে সি দল। তাদের ওপর দায়িত্ব কৌশলে শাহবাজপুর সেতুর দখল নেওয়া। এই দলকে অণুসরণ করছে এ দল। দুই দলের মধ্যে আছে কিছুটা দূরত্ব। সবশেষে ডি দল। দলের সঙ্গে আছেন মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাটালিয়ন অধিনায়কও। এই অভিযানে বিকেলে এস ফোর্সের অধিনায়ক কে এম শফিউল্লাহমুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাসহ তার অবস্থান ডি দলের কিছুটা সামনে। তার ও ডি দলের মধ্যে ব্যবধান অল্প। ডি দলের মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে যেতে থাকলেন দৃপ্ত পদভারে। তাদের সামনে কে এম শফিউল্লাহ। কোথাও তারা বাধা পাননি। বিকেলের দিকে তারা পৌঁছে গেলেন ইসলামপুরের কাছে। অদূরে চান্দুরা। এমন সময় সেখানে আকস্মিকভাবে হাজির হলো একদল পাকিস্তানি সেনা। হঠাৎ তাদের উপস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা বিভ্রান্ত। পাকিস্তানি সেনাদের এই উপস্থিতি একেবারে অনাকাঙ্ক্ষিত। আবদুল মালেকসহ মুক্তিযোদ্ধারা ভেবে পাচ্ছেন না, এটা কীভাবে ঘটল। কেননা, পেছনে আছে তাদের বি দল। তাদের ওপর দায়িত্ব অগ্রসরমান মুক্তিযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কে এম শফিউল্লাহ পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু সেনারা সেই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে গোলাগুলি শুরু করল। নিমেষে সেখানে শুরু হয়ে গেল তুমুল যুদ্ধ। আবদুল মালেকরা পড়ে গেলেন উভয় সংকটে। একদিকে কে এম শফিউল্লাহ পাকিস্তানি সেনাদের আওতায়, অন্যদিকে তারা ক্রসফায়ারের মধ্যে। আকস্মিকভাবে শুরু হওয়া যুদ্ধে ক্রসফায়ারে পড়ে আহত হয়েছেন তাদের অধিনায়ক এ এস এম নাসিমসহ কয়েকজন। আবদুল মালেক বিচলিত হলেন না। সাহসিকতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঝাঁপিয়ে পড়লেন পাকিস্তানি সেনাদের ওপর। তাকে দেখে অণুপ্রাণিত হলেন তার অন্য সহযোদ্ধারাও। এই যুদ্ধে তিনি যথেষ্ট বীরত্ব ও সাহস প্রদর্শন করেন। [৪]

পুরস্কার ও সম্মাননা[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. https://www.thedailystar.net/news-detail-201127
  2. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৪-০৭-২০১২[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৯৫। আইএসবিএন 9789843351449 
  4. একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা (দ্বিতীয় খন্ড)। ঢাকা: প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ১৭৪। আইএসবিএন 9789849025375 

বহি:সংযোগ[সম্পাদনা]