আবদুর রাজ্জাক (অধ্যাপক)

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
জাতীয় অধ্যাপক

আব্দুর রাজ্জাক
অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক
অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাক
জন্মআব্দুর রাজ্জাক
১৯১৪
পড়াগ্রাম মাতুলালয়ে, নবাবগঞ্জ উপজেলা, ঢাকা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২৮ নভেম্বর ১৯৯৯(1999-11-28) (বয়স ৮৪–৮৫)
পেশাজাতীয় অধ্যাপক
ভাষাবাংলা
জাতীয়তাবাংলাদেশি
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
শিক্ষাএমএ
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিState of the Nation: জাতির অবস্থা
দাম্পত্যসঙ্গীঅবিবাহিত

আব্দুর রাজ্জাক (১৯১৪ - ২৮ নভেম্বর, ১৯৯৯) বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং বুদ্ধিজীবী[১]। ১৯৭৩ সালের প্রথমদিকে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে পিএইচডি প্রদান করে। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে।

তার জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত ছিল বিশেষত প্রাচ্যতত্ত্ব, ইতিহাস ও রাজনীতিতে। তিনি 'শিক্ষকদের শিক্ষক' হিসেবে অভিহিত হতেন। তার অনুগামীদের মধ্যে শুধু বুদ্ধিজীবী নয়, শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাও ছিলেন[১]

প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]

রাজ্জাক ১৯১৪ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পাড়াগ্রামে তাঁর মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্দুল আলি একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিলো ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ থানার আলীনগর গ্রামে। উনার শৈশব কাল কলাতিয়াতেই কেটেছে। শৈশবের লেখাপড়ার হাতে খড়িও কলাতিয়া স্কুলে। বেশ ক’বছর কলাতিয়ায় তার শৈশব কাটলেও পরবর্তীতে তারা স্বপরিবরে ঢাকায় স্থানন্তরিত হন। ঢাকার মুসলিম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৩১ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৩৬ সালে তিনি প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর পাস করেন। তিনি লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে অধ্যাপক হ্যারল্ড লাস্কির অধীনে পিএইচডি করার জন্যে লন্ডন গমন করেন; তবে লাস্কি পরলোকগমন করায় তার থিসিস মূল্যায়ন করার মতো কেউ নেই এই বিবেচনায় তিনি থিসিস জমা না-দিয়েই (অর্থাৎ কোনো ডিগ্রি ছাড়াই) দেশে প্রত্যাবর্তন করেন[১][২]

প্রফেসর রাজ্জাকের চরিত্রের প্রণিধানযোগ্য বৈশিষ্ট্যটি আমি সব সময়ে সশ্রদ্ধ বিস্ময়ে লক্ষ করে আসছি, সেটি হল তাঁর নিজের দেশ, সমাজের প্রতি নিঃশর্ত অঙ্গীকার। এই অঙ্গীকারবোধই প্রফেসর রাজ্জাককে অন্য সকলের চাইতে আলাদা করেছে।
...রাজ্জাক সাহেব মনে-প্রাণে একজন খাঁটি সেক্যুলার মানুষ। কিন্তু বাঙালি মুসলমানসমাজের সেক্যুলারিজমের বিকাশের প্রক্রিয়াটি সমাজের ভেতর থেকে, বাঙালি মসলমানের সামাজিক অভিজ্ঞতার স্তর থেকে বিকশিত করে তুলতে হবে, একথা তিনি মনে করেন।

আহমদ ছফা (১৯৯৮)[৩]

কর্মজীবন[সম্পাদনা]

১৯৩৬ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক-অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে এ বিভাগ থেকে অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান দুটি পৃথক বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে যোগ দেন। পদোন্নতির আবেদন করতেন না বিধায় তিনি দীর্ঘকাল জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দিলে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর নেন।[১]

প্রকাশিত গ্রন্থ[সম্পাদনা]

কন্যাকুমারী তার একটি বিখ্যাত উপন্যাস

আব্দুর রাজ্জাক (বায়ে) এবং আহমদ ছফা (ডানে)

প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাক অল্প কিছু প্রবন্ধ ছাড়া কিছুই রচনা না করলেও তার অসাধারণ জ্ঞান ও প্রজ্ঞার কারণে কিংবদন্তির খ্যাতি অর্জন করেন। আহমদ ছফা তাকে নিয়ে যদ্যপি আমার গুরু নামে একটি বই রচনা করেছেন। এছাড়া সরদার ফজলুল করিম তার সাথে আলাপচারিতার ওপর ভিত্তি করে একটি বই লিখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ববঙ্গীয় সমাজঃ অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের আলাপচারিতা

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. মোহাম্মদ মাহমুদুব্ধামান। "রাজ্জাক, আবদুর"। সিরাজুল ইসলাম। বাংলাপিডিয়াঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি 
  2. "A Philomath and Polymath"দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। নভেম্বর ২৯, ২০১৩। ৩ মে ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ২৪, ২০১৪ 
  3. ছফা, আহমদ (২০১৫) [রচনাকাল ১৯৯৮]। যদ্যপি আমার গুরুআহমদ ছফা রচনাবলি, ১ম খণ্ড। ঢাকা: খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি। পৃষ্ঠা ২৬২, ২৬৪। আইএসবিএন 984 408 119 X 

বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]