আকরিক

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
লোহার আকরিক
ম্যাংগানিজের আকরিক -সিলোমিলেন; ৬.৭ x ৫.৮ x ৫.১ সেমি
সিসার আকরিক
স্বর্ণের আকরিক

আকরিক দ্বারা কোন প্রাকৃতিক পাথর বা শিলাকে বোঝানো হয় যার মধ্যে মূল্যবান খনিজ পদার্থ থাকে। বিশেষ করে ধাতব খনিজ পদার্থআকরিক হল এমন এক খনিজ পদার্থ যার সাহায্যে প্রয়োজনীয় ধাতুকে অল্প খরচে এবং সহজ উপায়ে নিষ্কাশন করা যায়। এইসকল শিলাকে মাটি খুঁড়ে উত্তোলন করা যায়, বাজারজাত করা যায় এবং বিক্রি করে লাভও করা যায়। মাটি থেকে উত্তোলনের পর এর থেকে মূল্যবান পদার্থ আলাদা করা হয়। এই ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই আকরিককে গলানো হয়। আবার ভিন্ন পদ্ধতিও অবলম্বন করা হয়।[১]

একটি আকরিকের মূল্য নির্ধারিত হয় ঠিক কোন ধরনের পদার্থ দিয়ে এটি তৈরি তার ওপর। একটা আকরিকের মূল্য অবশ্যই এমন হওয়া উচিত, যেন উত্তোলন থেকে বাজারজাত করা পর্যন্ত যে খরচ হয়, তার থেকে তা বেশি হয়। অর্থাৎ লাভ না থাকলে সেই আকরিকের খুব একটা মূল্য থাকেনা।[১]

ধাতুর আকরিকগুলো সাধারণত অক্সাইড, সালফাইডস, সিলিকেটসের হয়ে থাকে। আকরিককে উত্তোলন করা হয় কোন মূল্যবান ধাতু বা বিশেষ কোন পদার্থের জন্য। বিভিন্ন কারণে আকরিক তৈরি হতে পারে। ভূতাত্ত্বিক নানা বিষয় এর সাথে জড়িত।

আকরিকের উৎস[সম্পাদনা]

আকরিকের উৎস দ্বারা বিশেষ কোন স্থানের নাম বোঝানো হয় যেখানে আকরিক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। আকরিকের উৎস আর খনিজ পদার্থের উৎস এক নয়। দুটোর ক্ষেত্রে কিছু পার্থক্য রয়েছে। একটি স্থানকে আকরিকের উৎস হতে হলে এখানে যেকোন বিশেষ প্রকারের আকরিককে বেশি পরিমাণে থাকতে হবে। আকরিকের উৎসগুলোর নাম থাকে। এই নামগুলো বিভিন্ন ভাবে দেয়া হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জায়গার নামানুসারে নামকরণ করা হয়। উদাহরণ হিসবে বলা যায়, উইটওয়েটারস্র্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা। আবার আকরিকের আবিষ্কারকের নামানুসারেও দেয়া হয়। যেমন নিকেলের আকরিকের নামকরণ করা হয়েছে এভাবে। আলৌকিকতা, কোন দেবতা, বিখ্যাত ব্যক্তি, পুরাণ কাহীনি, অথবা আকরিক খনন করার কোম্পানির নামের সাথে মিল রেখেও নামকরণ করা হয়। নিকেল সালফাইড আকরিকের উৎসের নাম এমকেডি-৫ রাখা রয়েছে। কারণ এই নামে একটি কোম্পানি প্রথম এই আকরিকটি খনন করে।

বাণিজ্য[সম্পাদনা]

আন্তর্জাতিকভাবে আরকিরেক আমদানি-রপ্তানি হয়। তবে একটি দেশ কতটুকু আকরিক আদান প্রদান করতে পারবে তার একটি নীতিমালা থাকে।

সুপরিচিত ধাতুসমূহ যেমন কপার, লেড, জিংক, নিকেল ইত্যাদি লন্ডন মেটাল একচেঞ্জ দ্বারা বাজারজাত করা হয়। এক্ষেত্রে ছোট ছোট আদান প্রদানে কমেক্স তদারকি করে। যুক্তরাষ্ট্রে নাইমেক্স আকরিকের বাজার দেখা-শোনা করে। চিনের ক্ষেত্রে করে দ্যা সাঙ্ঘাই ফিউচারস

চারবছর পরপর আকরিকের দাম নির্ধারিত হয়। বিশেষ করে গ্রহীতা, উৎপাদনকারীর ওপর ভিত্তি করে তা করা হয়। তবে বিশ্বব্যাপী একই দাম নির্ধারণ করার কোন সংস্থা থাকে না।

২০০৫ সালের বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী চিন সবচেয়ে বেশি আকরিক আমদানি করে। এরপরেই আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান[২][তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

গুরুত্বপূর্ণ কিছু আকরিক[সম্পাদনা]

অ্যলুমিনিয়াম এবং অ্যলুমিনিয়াম অক্সাইডের প্রধান উৎস বক্সাইট। এর সংকেত Al
2
H
2
O
4
[৩] ক্রোমিয়াম ধাতুর উৎস ক্রোমাইট আকরিক। এর রাসায়নিক সংকেত (Fe,Mg)Cr
2
O
4
। এভাবে আরও বলা যায়, আকানথাইট (রূপা), স্পেরিলাইট (প্লাটিনাম), উরারিনাইট (ইউরেনিয়াম), সিন্নাবার (পারদ), গেলেনা (লেড), ম্যাগনেটাইট, ইলমেনাইট, হেমাটাইট, ক্রোমাইট, কোবালটাইট, ক্যাসিটেরাইট, চালকোসাইট, মলিবডেনাইট (মলিবডেনাম), বোরনাইট, ব্যারাইট ইত্যাদি।

আরও দেখুন[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Hustrulid, William A.; Kuchta, Mark; Martin, Randall K. (২০১৩)। Open Pit Mine Planning and Design। Boca Raton, Florida: CRC Press। পৃষ্ঠা 1। আইএসবিএন 9781482221176। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০২০ 
  2. "Background Paper - The Outlook for Metals Markets Prepared for G20 Deputies Meeting Sydney 2006" (পিডিএফ)। The China Growth Story। WorldBank.org। Washington। সেপ্টেম্বর ২০০৬। পৃষ্ঠা 4। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৭-১৯ 
  3. "বক্সাইট খনি: অবলম্বন ও দুর্ভাবনা"। ডি ডাব্লিউ বাংলা। 

আরও পড়ুন[সম্পাদনা]

বাইরের সংযোগ[সম্পাদনা]

উইকিমিডিয়া কমন্সে আকরিক সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।