অপারেশন জ্যাকপট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অপারেশন জ্যাকপট
মূল যুদ্ধ: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ

অপারেশন জ্যাকপটের আংশিক নকশা। সঠিক তথ্যের অভাবে কিছু স্থান আনুমানিকভাবে চিহ্নিত।
তারিখ১৫ আগস্ট ১৯৭১
অবস্থান
১। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর

২। মংলা সমুদ্রবন্দর ৩। চাঁদপুর নদীবন্দর

৪নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর
ফলাফলমুক্তিবাহিনীর জন্য প্রশিক্ষন এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম সরবরাহ
• পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর শক্তিমত্তার প্রদর্শন
• পাকিস্তানি নৌবাহিনীকে দূর্বল করা
অধিকৃত
এলাকার
পরিবর্তন
বাংলাদেশ
বিবাদমান পক্ষ
 বাংলাদেশ  পাকিস্তান
সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী

মুক্তি বাহিনী :[১]
বাংলাদেশ কর্নেল এম এ জি ওসমানী

বাংলাদেশ মেজর রফিকুল ইসলাম (সেক্টর-১)
বাংলাদেশ লে. ক. খালেদ মোশাররফ (সেক্টর-২)
বাংলাদেশ লে. ক. কে এম শফিউল্লাহ (সেক্টর-৩)
বাংলাদেশ কর্নেল সি. আর. দত্ত (সেক্টর-৪)
বাংলাদেশ লে. ক. মীর শওকত আলী (সেক্টর-৫)
বাংলাদেশ উইং কমান্ডার এম কে বাশার (সেক্টর-৬)
বাংলাদেশ লে. ক. কিউ এন জামান (সেক্টর-৭)
বাংলাদেশ মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (সেক্টর-৮)
বাংলাদেশ মেজর মোঃ জলিল (সেক্টর-৯)
বাংলাদেশ নৌ কমান্ডো (সেক্টর-১০)
বাংলাদেশ লে. ক. আবু তাহের (সেক্টর-১১)

ভারতীয় সেনাবাহিনী:[২]
ভারতলে. জে. বি. এন. "জিমি" সরকার[৩]
ভারতলে. জে. জগজিৎ সিং অরোরা
ভারতব্রিগেডিয়ার বি. সি. জোশী - আলফা সেক্টর
ভারতব্রিগেডিয়ার প্রেম সিং – ব্র্যাভো সেক্টর
ভারত ব্রিগেডিয়ার এন. এ. সালিক – চার্লি সেক্টর
ভারত ব্রিগেডিয়ার সহদেব সিং – ডেল্টা সেক্টর
ভারতব্রিগেডিয়ার এম. বি. ওয়াধ – একহো সেক্টর
ভারত ব্রিগেডিয়ার সন্ত সিং – ফক্সট্রট সেক্টর
পাকিস্তান সেনাবাহিনী:
লে. জে. আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী
রিয়ার এডমিরাল মোঃ শরিফ
ব্রি. জে. উইলিয়াম হ্যারিসন
কমোডর ডেভিড আর. ফেলিক্স
শক্তি
মুক্তি বাহিনী :[১]
সেক্টর ১০ এর অধীনে ১৪৮ জন নৌ কমান্ডো।

পাকিস্তান সেনাবাহিনী:
১৪ পদাতিক
৯ পদাতিক
১৬ পদাতিক
৩৯ (এড-হক) পদাতিক
৩৬ (এড-হক) পদাতিক
৯৭ স্বতন্ত্র পদাতিক
৪০ সেনা লজিস্টিক ব্রিগ্রেড
৮ সেনা এভিয়েশন স্কোয়াড্রন
পাকিস্তান নৌবাহিনী:
পাকিস্তান নৌ সীল
পাকিস্তান মেরিন কর্পস
১৭ নৌ (সার্চ এন্ড ডেস্ট্রয়) স্কোয়াড্রন
পাকিস্তান বিমান বাহিনী:
১৪ নং স্কোয়াড্রন

আধাসামরিক বাহিনী:
পূর্ব পাকিস্তান সিভিল আর্মড ফোর্স: ৬ সেক্টর হেড-কোয়ার্টারস উইংস , ১৭ অপারেশনাল উইংস [৪]
রাজাকার

অপারেশন জ্যাকপট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নৌ-সেক্টর পরিচালিত সফলতম গেরিলা অপারেশন। এটি ছিল একটি আত্মঘাতী অপারেশন। এ অপারেশন ১৯৭১-এর ১৫ আগস্ট রাত ১২টার পর অর্থাৎ ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামমংলা সমুদ্র বন্দর এবং দেশের অভ্যন্তরে চাঁদপুরনারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরে একই সময়ে পরিচালিত হয়।[৫] ১০নং সেক্টরের অধীনে ট্রেনিং প্রাপ্ত নৌ কমান্ডো যোদ্ধাদের অসীম সাহসিকতার নিদর্শন এই অপারেশন জ্যাকপট। এই গেরিলা অপারেশনে পাকিস্তানি বাহিনীর অনেকগুলো অস্ত্র ও রসদবাহী জাহাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও বড় রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংসপ্রাপ্ত জাহাজগুলোর মধ্যে পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্যকারী অনেক বিদেশি জাহাজও থাকায় এই অপারেশন বাংলাদেশের যুদ্ধ এবং যোদ্ধাদেরকে সারা বিশ্বে পরিচিতি পাইয়ে দেয়।সারা বিশ্ব বুঝতে পারে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই লড়ছে।এটি বাংলাদেশের ইতিহাস এর খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিশন।

নৌ-কমান্ডো সেক্টর[সম্পাদনা]

বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল তার মধ্য দেশের অভ্যন্তরীন সকল নৌ চলাচল, বন্দর এবং উপকূলীয় এলাকা নিয়ে গঠিত হয়েছিল ১০নং সেক্টর বা নৌ সেক্টর। এ সেক্টরের কোন নির্দিষ্ট সেক্টর কমান্ডার ছিল না। যখন যে সেক্টরে অপারেশন চলত তখন সেই সেক্টরের কমান্ডারদের সহযোগীতায় নৌ-গেরিলাদের কাজ করতে হত। তারা সরাসরি মুজিবনগর হেডকোয়ার্টারের অধীনে কাজ করতেন।

পেছনের কথা[সম্পাদনা]

মার্চের শুরুর দিকে পাকিস্তানি সাবমেরিন পি এন এস ম্যাংরো ফ্রান্সের তুলন সাবমেরিন ডকইয়ার্ডে যায় পাকিস্তানি সাবমেরিনারদের প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য। সেই ৪১ জন সাবমেরিনারদের মধ্যে ১৩ জন ছিলেন বাঙালি অফিসার। তারা আন্তর্জাতিক প্রচার মাধ্যমে ২৫ মার্চের গণহত্যার কথা শুনে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের মধ্যে ৯ জন ৩০ মার্চ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন এবং একজন ভুল পথে চলে গিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দার হাতে নিহত হন।[৬] ৯ এপ্রিল ১৯৭১ তারা দিল্লিতে এসে পৌছান।[৭] এখানে তাদের নাম উল্লেখ করা হলোঃ-[৮]

  1. মোঃ রহমতউল্লাহ।
  2. সৈয়দ মোশাররফ হোসেন।
  3. শেখ আমানউল্লাহ।
  4. মোঃ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী।
  5. মোঃ আহসানউল্লাহ।
  6. মোঃ আবদুর রকিব মিয়া।
  7. মো আবদুর রহমান আবেদ।
  8. মোঃ বদিউল আলম।

তারপর উক্ত ৮জনের সাথে আরো কয়েকজনকে একত্র করে ২০ জনের একটি গেরিলা দল গঠন করে তাদের ভারতে বিশেষ ট্রেনিং দেয়া হয়। তারপর তারা দেশে আসলে তাদের সাথে কর্নেল ওসমানীর দেখা করানো হয়। তখন ওসমানী নৌ-কমান্ডো বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

গেরিলা ট্রেনিং পর্ব[সম্পাদনা]

ওসমানীর সিদ্ধান্তে নৌ-কমান্ডো সেক্টর খোলার পর বাছাইকৃত গেরিলাদের ট্রেনিং দেয়ার উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক পলাশীর স্মৃতিসৌধের পাশে ভাগীরথী নদীর তীরে ২৩ মে ১৯৭১ তারিখে একটি গোপন ট্রেনিং ক্যাম্প খোলা হয়। এই ট্রেনিং ক্যাম্পের সাংকেতিক নাম দেয়া হয় সি-২ পি (C-2 P)। এখানে ট্রেনিং দেয়ার উদ্দেশ্যে অন্যান্য সেক্টরসমূহের বিভিন্ন শিবির থেকে মে মাসের শুরুর দিকে প্রায় ৩০০ জন বাছাইকৃত যোদ্ধা সংগ্রহ করা হয়।[৯] ট্রেনিং ক্যাম্পে এদের কি ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে সে বিষয়টি এতই গোপনীয় ছিল যে, সেক্টর কমান্ডারদের মধ্যেও শুধুমাত্র যার এলাকায় অপারেশন চালানো হবে তিনি ব্যতীত আর কেউ এই সম্পর্কে জানতেন না।[১০]

ট্রেনিং শুরু হবার আগেই বাছাইকৃত যোদ্ধাদের বলে দেয়া হয় যে এটি একটি সুইসাইডাল অপারেশন বা আত্মঘাতী যুদ্ধ হবে। তাই অপারেশনের সময় যেকোন মূল্যে অপারেশন সফল করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনে তাদের প্রাণ দিতে হতে পারে। তাই প্রশিক্ষণের শুরুতেই প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীদের ছবিসহ একটি সম্মতিসূচক ফর্মে স্বাক্ষর নেয়া হতো।ফর্মে লেখা থাকতো যে, আমি দেশের স্বাধীনতার জন্য জীবন বিসর্জন দিতে সম্মত হয়েই এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছি, আর যুদ্ধে আমার মৃত্যু ঘটলে কেউ দায়ী থাকবে না। [১১]

নৌ-কমান্ডোদের ঐ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় নেভাল অফিসার কমানডার এম.এন.সামানত, ও ট্রেনিং দেয়ার দায়িত্বে ছিলেন লেঃ কমান্ডার জি এম মার্টিস, এবং আরও ভারতীয় ২০ জন প্রশিক্ষক তারা হলেনন লেঃ দাস, লেঃ ভি.পি. কফিল। প্রশিক্ষকদের মধ্যে ফ্রান্স থেকে পালিয়ে আসা ৮ জন সাব-মেরিনার ছাড়াও আরো ছিলেন ভারতীয় নৌ-বাহিনীর লিডিং সি,মান কে.সিং, লিডিং সি,মান গুপ্ত, এল সিং, মারাঠি নানা বুজ এবং সমীর কুমার দাশসহ আরো কয়েকজন।[৮]

ট্রেনিং এর দুটো অংশ ছিল। সবাইকে প্রয়োজনীয় স্থলযুদ্ধ যেমনঃ- গ্রেনেড নিক্ষেপ, এক্সপ্লোসিভের ব্যবহার, স্টেনগান রিভলবার চালানো, আন-আর্মড কমব্যাট(খালি হাতে যুদ্ধ) ইত্যাদি শিখতে হতো। আর জলযুদ্ধের ট্রেনিঙের মধ্যে ছিল বিভিন্ন ধরনের সাতার যেমনঃ- বুকে ৫-৬কেজি ওজনের পাথর বেধে সাতার, চিৎ সাতার, কোন মতে পানির উপরে নাক ভাসিয়ে একটানা অনেক্ষন সাতার, পানিতে সাতরিয়ে এবং ডুব সাতার দিয়ে লিমপেট মাইন ব্যবহার, স্রোতের প্রতিকূলে সাতার, জাহাজের কেবল ভাঙা ইত্যাদি কঠিন সব প্রশিক্ষণ দেয়া হত তীব্র খরস্রোতা ভাগীরথী নদীতে। শীত-বর্ষায় একটানা ৪৮ ঘণ্টা পানিতে থাকার অভ্যাস করতে হয় সব যোদ্ধাকে।[১২] প্রায় টানা তিন'মাস ট্রেনিং এর পর আগস্টের প্রথম সাপ্তাহে তাদের ট্রেনিং শেষ হয়।

অপারেশনের বর্ণনা[সম্পাদনা]

যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের শেষদিকে এসে আক্রমণের পরিকল্পনা সাজানো হতে থাকে। একই সাথে একই সময়ে দুই সমুদ্র বন্দর ও দুই নদী বন্দরে আক্রমণ চালানোর জন্য চার সেক্টরের পরিকল্পনার সমন্বয় ঘটানো হয়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রথম ব্যাচকে চার স্থানে আক্রমণের উদ্দেশ্যে মোট চারটি দলে ভাগ করা হয়েছিল। ৬০ জনের ২টি দল এবং ২০ জনের আরো ২টি দল। চারটি দলের চারজন লিডার ঠিক করে দেয়া হয়েছিল। টিম লিডারদের অপারেশন পরিচালনার জন্য শিখিয়ে দেয়া হয়েছিল বিশেষ গোপনীয় পদ্ধতি যা টিমের অন্যান্য সদস্যদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল।[৮] টিম কমান্ডারদের বলা হয়েছিল যে, দুটি বাংলা গানকে সতর্ক সঙ্কেত হিসেবে ব্যবহার করা হবে। গান দুটি প্রচার করা হবে কলকাতা আকাশবানীর পক্ষ থেকে পূর্বাঞ্চলীয় শ্রোতাদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানে সকাল ৬টা থেকে ৬:৩০ মিনিট অথবা রাত ১০:৩০ মিনিট থেকে রাত ১১টায়। এই ফ্রিকোয়েন্সির নাম ও গান দুইটি শুধু টিমের কমান্ডারই জানতো।[১০] গান দুটি অথবা তাদের সঙ্কেত হলোঃ-

  1. প্রথম সংকেত ছিল পঙ্কজ মল্লিকের গাওয়া "আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলাম গান"এর অর্থ হল 'একশন সিগনাল, ২৪ ঘণ্টা মধ্যে আক্রমণ করতে হবে বা আক্রমণের সময় কাছাকাছি। অর্থাৎ ঐ দিনগত রাত ১২টার সময় অপারেশন। [১৩]
  1. সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এর গাওয়া গান "আমার পুতুল আজকে প্রথম যাবে শ্বশুরবাড়ি" যার অর্থ ওয়ার্নিং সিগনাল, ৪৮ ঘণ্টা পরে অপারেশন, আক্রমণের জন্য ঘাঁটি ত্যাগ কর। [১৪]
দলগুলোর বর্ণনা[৮]
দল নং প্রধানের নাম সদস্য সংখ্যা গন্তব্যস্থল
দল ১ সাবমেরিনার আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী ৬০ চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর
দল ২ নৌ-কমান্ডো আমিনুর রহমান খসরু ২৬০ (৬০ জন নৌ কমান্ডো ও ২০০ জন সি আন্ড সি কমান্ডো) মংলা সমুদ্র বন্দর
দল ৩ সাবমেরিনার বদিউল আলম ২০ চাঁদপুর নদী বন্দর
দল ৪ সাবমেরিনার আবদুর রহমান ২০ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর

যাত্রা শুরু হয়েছিল পলাশির হরিনা ক্যাম্প থেকে। পরিকল্পনা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল, তারা একযোগে পৌছে যাবেন স্ব স্ব এলাকা চট্টগ্রাম,মংলা, চাঁদপুর ও নারায়ণগঞ্জ।তারা যাত্রা করার সময় তাদেরকে প্রয়োজনীয় অস্ত্র দিয়ে দেয়া হয়। প্রত্যেক নৌ-কমান্ডোকে একটি করে লিমপেট মাইন,ছুরি,একজোড়া সাঁতারের ফিন আর কিছু শুকনো খাবার দেয়া হয়। প্রতি তিন জনের জন্য একটি করে স্টেনগান এবং কমানডারদের দেয়া হয় একটি করে ট্রানজিস্টার। অপারেশনের দিন ধার্য করা হয়েছিল ১৫ আগস্ট, ১৯৭১। এখানে অপারেশন গুলোর বর্ণনা দেয়া হলঃ

চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর অপারেশন[সম্পাদনা]

চট্টগ্রাম বন্দরে অপারেশন পরিচালিত হয় ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে অর্থাৎ ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে। হরিনা ক্যাম্প থেকে আগত ৬০ জনের দলকে ২০ জন করে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়। ১ ও ২ নং দল তাদের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ভিন্ন ভিন্ন পথ ধরে চট্টগ্রামের নির্দিষ্ট বেইজ ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং ১৪ আগস্ট তারা প্রথম গানের সংকেত পায়। এই সংকেত পাবার পর তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কর্ণফুলী নদীর পূর্বতীরে চরলক্ষ্যায় তাদের বেইজ ক্যাম্পে পৌছায়। ৩য় দলটির তখনো কোন খবর পাওয়া যায় নি। এরপর ১৫ আগস্ট তারা ট্রানজিস্টারে চূড়ান্ত সংকেত পায়, এবং অপারেশনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে। এ অপারেশনে ৩১ জন কমান্ডো যোদ্ধা অংশ নেয়। ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে রাত ১টায় নৌ-কমান্ডোরা তাদের অপারেশনের জন্য যাত্রা করে। রাত ১টা ১৫ তে তারা পানিতে নেমে জাহাজের উদ্দেশ্যে সাঁতরানো শুরু করে, এবং বেশ দ্রুততার সাথে নিজ নিজ বাছাইকৃত টার্গেট জাহাজসমূহের গায়ে মাইন লাগিয়ে সাঁতার কেটে সরে পরে। রাত ১টা ৪০ মিনিটে প্রথম বিস্ফোরণ ঘটে। তারপর একে একে সব গুলো মাইন বিস্ফোরিত হয়।[১০] এ সফল অপারেশনে তিনটি বড় অস্ত্রবাহী জাহাজ এবং বড় জাহাজ গুলো হলোঃ

  1. এম ভি হরমুজ- এটি ১৪ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। ৯৯১০ টন অস্ত্রসম্ভারবাহী এই জাহাজটি ১৩ নং জেটিতে নোঙর করা ছিল।
  2. এম ভি আল-আব্বাস- এটি ১০৪১৮ টন সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ৯ আগস্ট ১২ নং জেটিতে অবস্থান নেয়।
  3. ওরিয়েন্ট বার্জ নং ৬ - এটি ৬২৭৬ টন অস্ত্র, গোলাবারুদ নিয়ে ফিস হারবার জেটির সামনে অবস্থান করছিল।

মংলা সমুদ্র বন্দর অপারেশন[সম্পাদনা]

২৭শে জুলাই ১৯৭১ সনে,৬০ জন নৌ- কমান্ডো ও ২০০ জন বাংলাদেশী সি আন্ড সি বিশেষ কমান্ডো দল আমিনুর রহমান খসরুর নেতৃত্বে ভারতের কানিং মাতলার বন্দর থেকে মংলা অপারেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। সুন্দর বনের গভীর জঙ্গল পাড়ি দিয়ে কমান্ডো দলটি ১৩ ই আগস্ট ১৯৭১ সনে সন্ধা ৬ টায় মংলা বন্দর এ পৌঁছায়। ২৬০ জনের কমান্ডো দলটি মংলা বন্দর ও ডাংমারি বিলের পিছনে, পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িতে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে মংলার দূরত্ব ডাংমারি বিলের মাঝ দিয়ে ৬ মাইল,নৌকায় পৌঁছোতে সময় লাগে ১ ঘণ্টা। ১৫ই আগস্ট,৭১ এ রেডিও মারফত একশন গান বাজার পর তারা পরম করুনাময় আল্লাহ`র কাছে স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল অপারেশনের সাফল্যের জন্য বিশেষ দোয়া করেন। ঠিক রাত ১২টায় কমান্ডোরা ১৫টি নৌকায় মংলা বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। মংলায় পৌঁছানোর শেষ সময় নির্ধারিত ছিল রাত ২ টা কিন্তু পথ পরিদর্শকের ভুল পরিচালনায় কমান্ডোরা নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে মংলা বন্দরে পৌঁছায়। ইতোমধ্যে অপারেশনের নকশা মাফিক বাংলাদেশের সব নদী ও সমুদ্র বন্দরে অপারেশন শেষ। এ অপারেশন শুধু মাত্র জীবনের ঝুঁকিই নয় বরং মংলার ১৬ আগস্ট, ১৯৭১ ভোরের এ অপারেশন ছিল সরাসরি একটি সুইসাইড একশান। সব বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে ভোর ৪:৩০ মিনিটে মংলা অপারেশন শুরু হয়,অপারেশন চলা কালে ২০০ জন সি আন্ড সি বিশেষ কমান্ডো দল, হেভি মেশিন গান, মেশিনগান, এনরগা সহকারে ৩ জনের ছোট ছোট দল করে, ৬৬টি উপদলে বিভক্ত হয়ে , নৌ-কমান্ডোদের ছাউনি দিতে (কভারিং দিতে) মংলা বাঁধের পিছনে অবস্থান নেন। অপারেশন চলাকালে, সি আন্ড সি কমান্ডো দলের উপ-কমান্ডার রাজা ও খিজির জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌ-কমান্ডোদের সহযোগিতায় মেশিনগান নিয়ে পশুর নদীর হাঁটু পানিতে নেমে আসেন। সময়ের অভাবে শুধুমাত্র ২৪ জন নৌ-কমান্ডো এ অভিযানে অংশ নিতে পেরেছিলেন। ৬টি উপদলে বিভক্ত হয়ে ২৪ জন নৌ-কমান্ডো ৬টি বিদেশী জাহাজে মাইন লাগান, ভোর ৬:৩০ মিনিট থেকে নৌ-কমান্ডোদের লাগানো মাইন বিকট শব্দ করে ফাটতে শুরু করে। ৩০ মিনিটের মধ্যেই পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ৪টি বিমান মংলা বন্দরের উপরে ঘুরতে দেখা যায়। আক্রান্ত জাহজগুলির মধ্য একটি সোমালীয়, একটি মার্কিন, ২টি চীনা, ১টি জাপানি ও ১টি পাকিস্তানি জাহাজ। এ অপারেশনে আক্রান্ত মোট ৬টি বিদেশী জাহাজই ধ্বংস হয় এবং ৩০,০০০ হাজার টন গোলা-বারুদ ও যুদ্ধের সরঞ্জাম সহকার ধীরে ধীরে পশুর নদীতে নিমজ্জিত হয়।[১৫] মংলা অপারেশন কমান্ডার আমিনুর রহমান,খসরু ও আরও ২ জন নৌ- কমান্ডো এ অপারেশনে মংলা বন্দর এর অতিরিক্ত বাধা পার হয়ে অসীম সাহসিকতার সাথে সোমালীয় ৭,০০০ হাজার টনের অস্ত্রসম্ভারবাহী জাহাজ এস,এস,লাইটং-এ মাইন লাগান এবং এস.এস. লাইটং-কে ধ্বংস করেন।[১৬] এই অপারেশনে দুইজন মুক্তিযোদ্ধা নিখোঁজ হন, ধারণা করা হয় তারা স্রোতের টানে ভেসে গেছেন অথবা মারা গেছেন।

চাঁদপুর নদী বন্দর অপারেশন[সম্পাদনা]

পত্রিকায় চাঁদপুর নদী বন্দর অপারেশনের ছবি

এটিও ১৯৭১ এর ১৫ আগস্ট মধ্যরাত বা ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে হয়েছিল। এ অপারেশনে ১৮ জন নৌ-কমান্ডো অংশ নেন। এ গ্রুপের ১৮ জনকে তিনজন করে মোট ৬টি ছোট দলে ভাগ করা হয়।[৮] এই অভিযানে মাইন বিস্ফোরণে ২টি স্টিমার, গমবাহী একটি জাহাজ সহ ছোট বড় আরো অনেকগুলো নৌযান ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।[৮]

নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর অপারেশন[সম্পাদনা]

এটিও ১৯৭১ এর ১৫ আগস্ট মধ্যরাত বা ১৬ আগস্ট প্রথম প্রহরে হয়েছিল। এ অপারেশনে মোট ৪টি জাহাজ ও বেশ কয়েকটি নৌযান নৌ কমান্ডোরা ধংস করেন। শহরের মাঝে এ অপারেশনে কমান্ডোরা বিশেষ সাহসকতার পরিচয় দান করেন। এ অপারেশনে মোট ২০ জন কমান্ডো অংশ নেন।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ[সম্পাদনা]

১৫ আগস্টের ঐ অপারেশনগুলোতেই প্রায় ২৬টি জাহাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং আরো অনেক নৌযান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।[১৭] আগস্ট মাসের এসব অপারেশন ছাড়াও আগস্ট-নভেম্বর মাসব্যাপী আরো অনেকগুলো নৌ-কমান্ডো অপারেশন পরিচালনা করা হয়। এসব অপারেশনে পাকিস্তানি বাহিনীর আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হলঃ

  1. প্রায় সর্বমোট ৫০৮০০ টন জাহাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত ও নিমজ্জিত।
  2. ৬৬০৪০ টন জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত।
  3. এবং বেশ কিছু সংখ্যক পাকিস্তানি নৌযান বাংলাদেশী নৌ-কমান্ডোদের হস্তগত।[১৮]

অপারেশনের মূল্যায়ন[সম্পাদনা]

নৌ কমান্ড মিশনগুলোর সবগুলোই কিন্তু সাফল্যের মুখ দেখেনি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহের পর পাহারা শক্তিশালী করায় চট্টগ্রামে আর কোন অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি,[১৯] যার ফলে চারবার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ধ্বংস করার চেষ্টা করা হলেও তা বিফলে যায়।[২০] কয়েকটি কমান্ডো দল শত্রুপক্ষের এম্বুশের কবলে পড়ে তাদের নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।[২১] দূর্ভাগ্য ও ভুল হিসাবের কারণেও কিছু অভিযান বিফল হয়।[২২] শত্রুপক্ষ তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করায় নারায়ণগঞ্জ, বগুড়া, ফরিদপুর এবং চট্টগ্রাম এর তেলের ডিপোগুলো স্যাবোটাজ করা সম্ভব হয়নি। যদিও পরবর্তীকালে মুক্তিবাহিনী হেলিকপ্টার এবং টুইন অট্টার বিমানের সাহায্যে ১৯৭১ সালের ২ ডিসেম্বরে চট্টগ্রাম এবং নারায়ণগঞ্জের তেল ডিপো দুটো ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

মোট ৫১৫ জন কমান্ডো সিটুপি (C2P) থেকে প্রশিক্ষন নেন। আটজন কমান্ডো শহীদ হন, ৩৪ জন আহত হন এবং আগস্ট-ডিসেম্বরের মাঝে ১৫ জন কমান্ডো শত্রুর হাতে ধরা পড়েন।[২৩] এই সময় কালের ভেতর নৌ কমান্ডোরা প্রায় ১২৬ টি জাহাজ/কোস্টার/ফেরি নষ্ট বা ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হন, এবং এক সূত্র মোতাবেক অগাস্ট-নভেম্বর ১৯৭১ এই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৬৫টি বিভিন্ন ধরনের নৌযান (১৫ টি পাকিস্তানি জাহাজ, ১১ টি কোস্টার, ৭ টি গানবোট, ১১ টি বার্জ, ২ টি ট্যাংকার এবং ১৯টি সাধারণ নৌযান) [২৪] তারা ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হন। কমপক্ষে ১০০,০০০ টন নৌযান ডুবিয়ে বা বিকল করে দেয়া হয়, জেটি এবং বন্দর অকার্যকর করে দেয়া হয় এবং চ্যানেলগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। কোনো নিজস্ব সামরিক নৌযান না থাকা সত্ত্বেও, নৌ কমান্ডোরা তদানিং পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) নৌপথকে একরকম নিজেদের দখলেই রেখেছিলো।[২৫]

শহীদ নৌ-কমান্ডো[সম্পাদনা]

  • কমান্ডো আব্দুর রাকিব, ফুলছড়ি ঘাট অপারেশনে শহীদ হন[২৬]
  • কমান্ডো হোসেইন ফরিদ, চট্টগ্রামে দ্বিতীয় অপারেশন চলাকালে পাক বাহিনীর হাতে শহীদ হন।[২৬]
  • কমান্ডো খবিরউজ্জামান, ফরিদপুরের দ্বিতীয় অপারেশনে শহীদ হন[২৬]
  • কমান্ডো সিরাজুল ইসলাম, এম আজিজ, আফতাব উদ্দিন এবং রফিকুল ইসলাম অপারেশন চলাকালীন নিখোঁজ হন।[২৬]

খেতাব পাওয়া নৌ-কমান্ডোদের নাম[সম্পাদনা]

অপারেশন হটপ্যান্ট[সম্পাদনা]

১৬ অগাস্ট এর অপারেশনের পর, সকল কমান্ডো ভারতে ফেরত যায়। এর পরে নৌ-কমান্ডোরা আর কোন পূর্ব-পরিকল্পিত এবং একযোগে অভিযান পরিচালনা করেননি। তার বদলে, ছোট ছোট দল পাঠানো হতো কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুর ওপর আঘাত হানতে, এবং সুযোগ পেলেই কমান্ডোরা সেখানে আক্রমণ চালাতেন।

মেজর জলিল, মুক্তিবাহিনীর সেক্টর ৯-এর কমান্ডার, অগাস্ট মাসে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার প্রধান তাজউদ্দীন আহমদ কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছিলেন একটি নৌ ইউনিটের গোড়াপত্তন করার[২৭] এবং সেই মোতাবেক কমান্ডার এম এন সামান্থ এর কাছে ৪টি গানবোটের জন্য আবেদন করেছিলেন। ১৯৭১ সালের অক্টোবার মাসে কোলকাতা বন্দর ট্রাস্ট ২টি টহলযান (অজয় এবং অক্ষয়) মুক্তিবাহিনীকে দান করে। ৩৮ লাখ ভারতীয় রুপি খরচায় নৌযান দুটি ক্ষিদিরপুর ডকইয়ার্ডে একমাস ধরে মেরামত করা হয়[২৮] যা পরবর্তীতে ২ টি কানাডিয়ান ৪০X৬০ মিমি বোফর গান এবং ২টি হালকা ইঞ্জিন এবং ৮ টি গ্রাউন্ড মাইন (ডেকের দুই পাশে চারটি করে) এবং উপরন্ত আরো ১১টি গ্রাউন্ড মাইন দ্বারা সজ্জিত করা হয়।[২৯] তাদের নতুন নাম দেয়া হয় বিএনএস পদ্মা এবং পলাশ, এবং তাতে মোট ৪৪ জন বাঙ্গালী নাবিক এবং ১২ জন নৌ-কমান্ডো ছিলেন। জাহাজ দুটোর নেতৃত্বে ছিলেন ভারতীর নৌবাহিনীর সদস্যরা এবং মুক্তিবাহিনীর কাছে তা পুরোপুরি হস্তান্তর করা হয় ৩০ অক্টোবর, ১৯৭১ সাল। প্রবাসী বাংলাদেশে সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাপ্টেন কামরুজ্জামানের উপস্থিতিতে কোলকাতা পোর্ট ট্রাস্ট চেয়ারম্যান পি কে সেন জাহাজ দুটো কমিশন করেন। লেঃ কমান্ডার কেপি রায় এবং কে মিত্র ছিলেন জাহাজ দুটোর কমান্ডে নিয়োজিত। বাংলাদেশে নবগঠিত এই নৌবাহিনীর উদ্দেশ্য ছিলো:[৩০]

  • চালনা প্রবেশমুখ মাইন দ্বারা উড়িয়ে দেয়া
  • পাকিস্তানি জাহাজের উপর হামলা চালানো

ভারতীয় নৌবাহিনীর ফ্রিগেটের প্রহরায়, নভেম্বরের ১০ তারিখ জাহাজদুটি সফলভাবে মংলা বন্দরের প্রবেশমুখে মাইন দ্বারা আক্রমণ চালাতে সক্ষম হয়। তার পরদিনই ১১ নভেম্বর, ১৯৭১ এ তারা ব্রিটিশ জাহাজ "দ্যা সিটি অফ সেইন্ট এলব্যান্স" কে মংলা বন্দর থেকে তাড়াতে সক্ষম হয়।[৩১]

তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. Islam, Major Rafiqul, A Tale of Millions, p. 228–230, আইএসবিএন ৯৮৪-৪১২-০৩৩-০
  2. Shafiullah, Maj. Gen. K. M. Bangladesh At War, p. 159, আইএসবিএন ৯৮৪-৪০১-৩২২-৪
  3. Jacob, Lt. Gen. J. F. R., Surrender at Dacca: Birth of a Nation, p. 90, আইএসবিএন ৯৮৪-৪০১-৩২২-৪
  4. Jacob, Lt. Gen. J. F. R., Surrender At Dacca: The Birth of A Nation, p. 190, আইএসবিএন ৯৮৪-০৫-১৩৯৫-৮
  5. সেজান মাহমুদ , "অপারেশন জ্যাকপট", পৃ ২, প্রকাশক| প্রতীক প্রকাশনী, ১৯৯১
  6. সেজান মাহমুদ, "অপারেশন জ্যাকপট", পৃ ১০-১১, প্রকাশক| প্রতীক প্রকাশনী, ১৯৯১
  7. সাখাওয়াত হোসেন মজনু। রণাঙ্গণে সূর্য সৈনিক। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র,চট্টগ্রাম। 
  8. শামসুল হুদা চৌধুরী। একাত্তরের রণাঙ্গণ। আহমদ পাবলিশিং। আইএসবিএন 984-11-0505-0 |আইএসবিএন= এর মান পরীক্ষা করুন: checksum (সাহায্য) 
  9. Siddiq Salik। Witness to surrender। The University Press Limited। 
  10. রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে। অনন্যা প্রকাশনী। আইএসবিএন 984-412-033-0 
  11. লে কর্নেল(অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরী। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। নাজমহল। পৃষ্ঠা পৃষ্ঠা ২৩১–২৩৭। 
  12. ডাঃ মাহফুজুর রহমান। বাঙালির জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র,চট্টগ্রাম। আইএসবিএন 984-8105-01-8 
  13. Sezan Mahmud, "Oparation Jackpot", p 2-3, প্রকাশক| বাংলাপ্রকাশ, ২০০৯
  14. সেজান মাহমুদ, "অপারেশন জ্যাকপট", পৃ ১০-১১, প্রকাশক| প্রতীক প্রকাশনী, ১৯৯১
  15. চেতনায় একাত্তর,Page 69,আইএসবিএন ৯৮৪-৭০২৬-০১১ {{আইএসবিএন}} এ প্যারামিটার ত্রুটি: চেকসাম-2
  16. War in Indian Ocean, By Vice-Admiral Mihir K.Roy.Page No 154. আইএসবিএন ১৮৯৭৮২৯ ১১ ৬
  17. খলিলুর রহমান (২০০৭)। মুক্তিযুদ্ধে নৌ-অভিযান। সাহিত্য প্রকাশ। আইএসবিএন 984-465-449-1 
  18. মঈদুল হাসান। মূলধারা '৭১। দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড। আইএসবিএন 984-05-0121-6 
  19. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, p. 94
  20. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, pp. 220–223
  21. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, pp. 122, 196-198, 217
  22. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, p. 84, p. 119, p. 201
  23. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, pp. 268–270, আইএসবিএন ৯৮৪-৪৬৫-৪৪৯-১
  24. Jacob, Lt. Gen. J. F. R., Surrender at Dacca, p. 91
  25. Ray, Vice Admiral Mihir K., War in the Indian Ocean, pp. 141, 174
  26. Operation Jackpot, Mahmud, Sezan, Mukhobondho
  27. Mukul, MR Akthar, Ami Bejoy Dekhechi, p. 36
  28. Islam, Maj. Rafiqul, A Tale of Millions p. 298
  29. Rahman, Md. Khalilur, Muktijuddhay Nou-Abhijan, p. 227, আইএসবিএন ৯৮৪-৪৬৫-৪৪৯-১
  30. Islam, Maj. Rafiqul, A Tale of Millions, p. 298
  31. Islam, Maj. Rafiqul, A Tale of Millions, p. 303

আরো জানতে পড়ুন[সম্পাদনা]

  • Salik, Brigadier Siddiq (১৯৭৭)। Witness to Surrenderআইএসবিএন 984-05-1373-7 
  • Jacob, Lt. Gen. J. F. R. (২০০৩)। Surrender at Dacca: The Birth of A Nation। The University Press Limited। আইএসবিএন 984-05-1395-8 
  • Islam, Major Rafiqul (২০০৬)। A Tale of Millions। Ananna Publishers। আইএসবিএন 984-412-033-0 
  • Shafiullah, Maj. Gen. K. M. (২০০৫)। Bangladesh at Warআইএসবিএন 984-401-322-4 
  • Rahman, Khalilur (২০০৬)। Muktijuddhay Nou-Abhijanআইএসবিএন 984-465-449-1 
  • Mukul, M. R. Akther (২০০৫)। Ami Bijoy Dekhechi। Sagar Publisher's। ওসিএলসি 416393761 
  • Niazi, Lt. Gen A. A. K (১৯৯৮)। The Betrayal of East Pakistan। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-577727-1  Bengali Translation: Samudro Prakashana, 2003 আইএসবিএন ৯৮৪-৮০৮০-২৪-৪
  • Hassan Khan, Lt. Gen. Gul (১৯৭৮)। Memories of Lt. Gen. Gul Hassan Khan। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-547329-9  Bengali Translation: 'Pakistan Jokhon Bhanglo' University Press Ltd. 1996 আইএসবিএন ৯৮৪-০৫-০১৫৬-৯
  • Ali Khan, Maj. Gen Rao Farman (১৯৯২)। How Pakistan Got Divided। Jung Publishers।  Bengali Translation: 'Bangladesher Janmo' University Press Ltd. 2003 আইএসবিএন ৯৮৪-০৫-০১৫৭-৭
  • Ayub, Muhammad (2005). An army, Its Role and Rule: A History of the Pakistan Army from Independence to Kargil, 1947–1999. RoseDog Books. আইএসবিএন ৯৭৮০৮০৫৯৯৫৯৪৭